৫ মে বাজারে উঠবে গোবিন্দভোগ, ২০ মে হিমসাগর
আপলোড সময় :
০১-০৫-২০২৫ ১০:২৩:৫৮ পূর্বাহ্ন
আপডেট সময় :
০১-০৫-২০২৫ ১০:২৩:৫৮ পূর্বাহ্ন
সাতক্ষীরায় আম পাড়ার ক্যালেন্ডার ঘোষনা করেছে জেলা প্রশাসন। ঘোষিত ক্যালেন্ডারানুযায়ী গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, বোম্বাই ও গোলাপখাস আম আগামী ৫ মে থেকে বাজারে উঠবে। এছাড়া ২০ মে থেকে হিমসাগর, ২৭ মে ন্যাংড়া এবং ৫ জুন থেকে আম্রপালি আম সংগ্রহ ও বাজারজাত শুরু হবে।
বুধবার সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ‘নিরাপদ আম বাজারজাতকরণ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানানো হয়।
তবে নির্ধারিত সময়ের আগে কোনো বাগানে আম পাকলে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তার অনুমাতি সাপেক্ষে আম পাড়তে ও বাজারজাত করতে পারবেন চাষিরা বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে । এদিকে আম ক্যালেন্ডার নিয়ে বিড়ম্বনায় সাতক্ষীরার চাষিরা।
সভায় জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাইফুল ইসলাম এবং আমচাষি, ব্যবসায়ী, কৃষি কর্মকর্তা ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সাতক্ষীরা জেলায় ৪ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে প্রায় ৫ হাজার আম বাগান রয়েছে। চলতি বছর এখান থেকে এবার ৬২ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে জেলা কৃষি বিভাগ। যার মধ্যে প্রায় ৫০০ মেট্রিক টন আম বিদেশে রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে।
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার মৌতলা এলাকার আমচাষি মো. আল আমিন বলেন, আমাদের গ্রাম সাতক্ষীরা জেলা সদর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে। এটি লবণাক্ত এলাকা হওয়ায় গাছে অগ্রিম মুকুল আসে। অতিরিক্ত গরমের কারণে জেলার অন্য এলাকা থেকে এখানে গোবিন্দভোগ জাতের আম ১৫-২০দিন আগে পরিপক্ব হয়। কিন্তু জেলা প্রশাসন থেকে সময় নির্ধারণ করা হয় জেলা সদরের আম গাছ দেখে। এতে আমাদের গাছের আম গাছেই নষ্ট হয়। তবে গতবার আমি একটু আগে আম বিক্রির চেষ্টা করেছিলাম। তখন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা এসে আমাকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করে। আমার কাছ থেকে ৮ ক্যারেট কাঁচা আমও নিয়ে যায়।
সাতক্ষীরা সদরের কুকরালি এলাকার আমচাষি রাহাত রাজা বলেন, বাগানে প্রচুর আম হয়েছে। ইতোমধ্যে গোবিন্দভোগ জাতের আম পাকতে শুরু করেছে। কিন্তু অনুমতি না থাকায় সেই আম বাজারে বিক্রি করতে পারছি না।
তিনি বলেন, চাষিদের সঙ্গে কোনো পরামর্শ না করে কিছু মুনাফালোভী ব্যবসায়ীর পরামর্শে কৃষি বিভাগ ও জেলা প্রশাসন থেকে আম পাড়ার তারিখ নির্ধারণ হয়। এতে আমরা সময়মতো আমের বাজার ধরতে পারি না। তা ছাড়া আম বাজারজাত করতে তারিখ নির্ধারণ করায় সবাই একসঙ্গে বাজারে আম নিয়ে গেলে আমের দাম কম পাওয়া যায় না। এতে হাজার হাজার আমচাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে অনেকে বাগানের গাছ কেটে কমিয়ে ফেলছেন। সেখানে অন্য ফসল চাষ করছেন। ফলে প্রতি বছরই আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, প্রতিটি জাতের আম পরিপক্ব হওয়ার একটি নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। আগে ভাগে পাড়লে আমের স্বাদ ও গুণগত মান কমে যায়, ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানির সুযোগ ক্ষুণ্ন হয়। ২০১৫ সাল থেকে সাতক্ষীরার আম ইউরোপে নিয়মিত রপ্তানি হচ্ছে, যা জেলার অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে।
সভায় আরও জানানো হয়, এ মৌসুমে আম সংগ্রহ ও পরিবহনে নজরদারি করতে মাঠ পর্যায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত, চেকপোস্ট ও বিশেষ মনিটরিং টিম কাজ করবে। কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সচেতন করতে চালানো হবে প্রচার অভিযানও।
নিউজটি আপডেট করেছেন : mainadmin
কমেন্ট বক্স